পেটে গ্যাস হলে করণীয় - পেটের গ্যাস দূর করার উপায় ও বিস্তারিত জানুন
কখনো কখনো আমাদের পেট ব্যথা এতটাই তীব্র হয়। যে এটি আমাদের পক্ষে সহ্য করা কোনভাবেই সম্ভব না। তাই পেটে গ্যাস হলে করণীয় - পেটের গ্যাস দূর করার উপায় ও বিস্তারিত জানুন।
প্রিয় পাঠক নিচে পেটের গ্যাস কমানোর উপায় ও গ্যাস হলে করণীয় কি তার বিস্তারিত বর্ণনা করা রয়েছে।
সূচিপত্রঃ পেটে গ্যাস হলে করণীয়-পেটের ব্যথা কমানোর উপায় ও ওষুধ.
পেটে গ্যাস হলে করণীয় - পেটের গ্যাস দূর করার উপায়
পেট ব্যথা আমাদের সবারই হয়। তাই এটি নিয়ে বেশি চিন্তা না করে আমরা এর চিকিৎসা করতে পারি। আমরা যদি বাইরের ভাজাপোড়া না, খাই তাহলে আমাদের পেটের সমস্যা হবে না। তাই আমাদের বাহিরের ভাজাপোড়া খাওয়া চলবে না। আমাদের বাসায় বানানো খাবার খেতে হবে।
যেটিতে তেল কম থাকবে এবং ভালো তেল থাকবে। কোন দাওয়াতে গেলে আমরা অনেক সময় বেশি খেয়ে ফেলি। যাতে আমাদের পেটের মধ্যে গ্যাস হয়। এমন ভাবে খাবার খাওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। না হলে এক সময় এই ছোট গ্যাসের সমস্যায় আমাদের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। যখন আমাদের গ্যাস হবে তখন আমরা যা যা করতে পারি,
- দৌড়াদৌড়ি ব্যায়াম করতে পারি।
- বেশি বেশি পানি খেতে পারি।
- ফলমূল খেতে পারি।
- যে ফলে পানীয় আছে এমন ফল খেতে পারি।
- গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারি।
- এবং বেশি সমস্যা হলে আমরা ওষুধ খেতে পারি।
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়
পেট ব্যথা আমরা যত দ্রুত ঠিক করতে পারব ততই আমাদের জন্য আরামদায়ক হবে। কেননা পেট ব্যথা আমাদের অনেক অসহ্যকর হয়ে ওঠে অনেক সময়। এটি আমরা অনেক সময় সহ্য করতে পারি না। তখন আমাদের অনেক বিরক্তকর ও কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। আমরা ঘরোয়া ভাবে আমাদের পেট ব্যথা ঠিক করতে পারি। যেমন:
- মাসাজ করা: আমরা পেটের ওপরে মাসাজ করার মাধ্যমে আমাদের পেট ব্যথা ঠিক করতে পারি। এটি আমাদের খুব দ্রুতই পেট ব্যথা থেকে আরাম দিতে সাহায্য করে।
- জিরা: আমাদের প্রায় সবার বাসাতে জিরা থাকে। এটি আমরা খাবারের মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। তবে আমরা যদি এটি পেট ব্যথার ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করি। তাহলেও এটি কাজ করবে। কেননা জিরা আমাদের হজম শক্তি ও গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই গ্যাসের সমস্যা হলে আমরা জিরা খেতে পারি।
- তুলসী পাতা: আমরা অনেকেই তুলসী পাতা চিনে থাকি। এটি আমাদের পুরনো দিনের কাশি ও জ্বরের জন্য আমরা খেয়ে থাকতাম। এটি খাওয়ার অনেক উপকারীতা রয়েছে। আমরা যদি এটি পেট ব্যথার কাজে খাই তাহলেও আমাদের পেট ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে।
- মৌরি: মৌরি হল এমন একটি খাবার জেটি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের খুব দ্রুতই কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে। এবং এটি আমাদের গ্যাস্টিকের সমস্যাও ঠিক করতে খুব দ্রুত সাহায্য করে।
- ক্যমোমিল চা: এই চা টি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের গ্যাস্ট্রিক যে প্রধান সৃষ্টি করে এটি দূর করতে সাহায্য করে। এবং এটি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের গ্যাসের সমস্যা দূর হবে।
- পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা আমাদের পেটের মধ্যে গ্যাস জমতে দেয় না। এটি প্রত্যেকদিন খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের গ্যাসের সমস্যা আর হবে না। সেজন্য পুদিনা পাতা নিয়মিত খাওয়া উচিত।
অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয়
আমাদের দেশে পেট ব্যথা একটি কমন সমস্যা। কেননা আমরা খুব বেশি অনিয়মে খাওয়া দাওয়া করি। এতে করে আমাদের পেটের ব্যথা খুব বেশি হয়ে থাকে। তারপরেও আমরা ঝালে পাগল। আমরা বেশি ঝাল খাই। বেশি ঝাড়, বেশি ভাজাপোড়া, বেশি বাইরের খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের পেটে খুব বেশি ব্যথা হয়ে থাকে। এমন সময় আমরা যা করতে পারি তা হলো:
- ফাইবার আছে এমন খাবার খাওয়া: পেটে আমাদের ব্যথা হলে যদি আমরা ফাইবার যুক্ত খাবার খাই। তাহলে আমাদের পেট ব্যথা কমবে। তাই আমাদের ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন: শস্য, ডাল, লেবু, শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম ইত্যাদি।
- গরম পানিতে গোসল করা: পেট ব্যথা হলে আমরা গরম পানিতে গোসল করতে পারি। এতে আমাদের পেট ব্যথা কমাতে পারি। এটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে আমরা যখন গরম পানিতে গোসল করি। তখন আমাদের পেটের ব্যথা দূর হয়ে যায়।
- পানি খাওয়া: আমরা যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করি। তখন আমাদের গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনাই থাকে না। এ কারণে গ্যাসের সময় আমরা যখন পানি পান করবো পর্যাপ্ত পরিমাণে। তখন আমাদের পেটের ভেতরটা ভরে গিয়ে গ্যাস বাহিরে চলে আসবে।
- হাটাহাটি করা: নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করার মাধ্যমে আমাদের পেটের গ্যাস ঠিক হয়ে যায়। এর জন্য আমাদের পেটে গ্যাসের সময় হাটাহাটি ও ব্যয়াম করা উচিত।
এতক্ষণ আমরা পেটে গ্যাস হলে করণীয় কি ও পেটের গ্যাস কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এখন আমরা জানবো পেটে ব্যথা হলে কি ওষুধ খেতে হয় বা পেটের ব্যথা হলে কি কি সমস্যা দেখা যায়।
পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে
কখনো কখনো দেখা দেয় যে আমাদের যখন গ্যাস হয় পেটের মধ্যে তখন আমাদের বুকের মধ্যে ধরফর করে। এটি অনেক এমন সময় দেখা দেয় যে, যখন আমাদের গ্যাস হয়। তখনই আমাদের এটা হয় অন্য সময়তে হয় না। এর কারণ হলো আমরা যখন খাবার খাই তখন আমাদের পেটে গিয়ে অনেক খাবার হজম হয় না।
এর জন্য সেটি থেকে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে, আমাদের বুকের মধ্যে ধরফর করে। এটিতে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। তবে এটি যদি অনেক বেশি সময় ধরে হয় আর কমতে না চাই তাহলে আমাদের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
পেটে গ্যাস হলে কি শ্বাসকষ্ট হয়
কখনো কখনো আমাদের গ্যাসের সমস্যাটি এমন হয়ে যায় যে গ্যাস হলে আমাদের শ্বাসকষ্ট এর সমস্যা হয়ে যায়। কখনো কখনো এমনটাও দেখা যায় যে আমাদের হার্টবিট বেড়ে যায় বুকের ধরফর করে। এটি আমরা তুচ্ছ মনে করলেও আসলে এটি তুচ্ছ সমস্যা নয়, এটি আমাদের পরবর্তীতে কোন চিকিৎসা না করলে এটি হতে পারে অনেক বড় সমস্যা।
আরো পড়ুনঃ পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়- পেটের সমস্যা দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
তাই পেটে গ্যাস হলে যদি আমাদের এমন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমাদের খুব দ্রুতই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। না হলে এটি পরবর্তীতে গ্যাস্ট্রিক আলসার হতে পারে বা পাকস্থলীতে রক্তপাত হতে পারে বা পাকস্থলী ক্যান্সার হতে পারে। এর জন্য আমাদের পেটে গ্যাস হলে যদি এমন সমস্যাগুলো দেখা দেয় তাহলে খুব দ্রুতই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
সকালে কি খেলে গ্যাস হবে না
আমরা যদি আমাদের খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতে পারি তাহলে আমাদের গ্যাসের সমস্যাই হবে না। তাই আমাদের প্রত্যেকদিন সকালে ভালো খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে করে আমরা সুস্থ থাকব। তাই আমরা প্রত্যেকদিন সকালে যা খেতে পারি:
- গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে: প্রত্যেকদিন সকালে যদি আমরা গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে খায়। তাহলে আমাদের গ্যাসের সমস্যা থেকে আমরা খুব দূরে থাকবো। এবং আমাদের গ্যাসের এসিডিটির সমস্যাও মধু খাওয়ার মাধ্যমে দূর হবে। এবং এটি আমাদের সারাদিন পুষ্টি দিতে সাহায্য করবে এবং আমরা সুস্বাস্থ্য বান হয়ে থাকবো।
- পেঁপে: পেঁপে আমাদের পেটের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা দূর করে থাকে। এবং আমাদের পেট ঠান্ডা রাখতে ও সাহায্য করে থাকে। তাই প্রত্যেকদিন সকালবেলায় খাবারের সাথে পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেটের গ্যাসের সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে। এবং পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেটের হজম শক্তি বাড়বে। এছাড়া পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, সি ,কে।
- তরমুজ: তরমুজ আমরা প্রত্যেকদিন খাবার মাধ্যমে আমাদের শরীরের মধ্যে অনেক বেশি পানি থাকবে এবং আমাদের পেট ঠান্ডা রাখে। যেটি আমাদের গ্যাস হতে দিবে না পেটের মধ্যে।
- ভেজানো বাদাম: সকাল বেলায় খালি পেটে বাদাম খাওয়ার অনেক উপকার রয়েছে। তাই প্রত্যেকদিন সকালে বাদাম খাওয়া যেতে পারে।
পেটে গ্যাস কমানোর ওষুধের নাম
আমরা কিছু ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে গ্যাসের সমস্যা দূর করতে পারে তা হল:
ম্যাগালড্রেট + সিমেথিকোন (Magaldrate+simethicone)
এটি আমাদের পেটের মধ্যে কার গ্যাস বাইরে বাহির করতে সাহায্য করবে। পেট ফাঁপা, পেট ফোলা এবং খাদ্য নালিতে বায়োজনিত ব্যথা দূর করে।
খাওয়ার নিয়ম
এটি চুষে খাওয়া লাগবে। এবং রাতে ঘুমানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে।
এটি গর্ভবতী মহিলাও খেতে পারবে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া যাবে না।
আমাদের পরামর্শ
আমাদের এমন খাওয়াবার খাওয়া উচিত। যেটিতে পেটের কোন সমস্যা না হয়, এমন খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেটে কোন সমস্যা হবে না। তাই আমরা অতিরিক্ত মাত্রায় খাবার না খেয়ে, স্বাস্থ্যসম্মত মাত্রায় খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবো। এবং সুস্থ থাকবো, ভালো থাকবো।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url