যেভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে ৮ টি লক্ষণ এবং খাদ্য তালিকা

প্রিয় পাঠক যেভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে ৮ টি লক্ষণ এবং খাদ্য  তালিকা সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য জরুরী। নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

যেভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে ৮ টি লক্ষণ এবং খাদ্য  তালিকা

আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাকে জানাবো যেভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে ৮ টি লক্ষণ এবং খাদ্য  তালিকা। আপনি যদি খাদ্য তালিকা এর খাদ্য গুলো এড়িয়ে চলেন আবার যেগুলো খেতে বলা হয়েছে সেগুলো যদি নিয়মিত খান। তাহলে আপনি এই ডায়াবেটিস এর সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিসের লক্ষণ- ওষুধ ও খাদ্য তালিকা 

যেভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে ৮ টি লক্ষণ এবং খাদ্য  তালিকা

আমাদের শরীরে ডাইবেটিস হয়েছে কিনা সেটি বোঝার জন্য আমাদের এর লক্ষণ গুলো জানতে হবে। আমরা এতক্ষণে ডায়াবেটিসের লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়ে গেছে। আমাদের যদি ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা সেটি বুঝতে হয় তবে আমাদের শরীরের ব্লাড সুগার পরীক্ষা করতে হবে। 

এর জন্য আমরা যদি হাসপাতালে যাই তবে, খালি পেটে যেতে হবে। কেননা খালি পেটে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হয়। আমাদের পেটের মধ্যে যদি 7 মিলিমোল/লিটার বা এর বেশি গ্লুকোজ পাওয়া যায় তবে ধরে নিতে হবে আমাদের ডায়াবেটিস হয়েছে। 

এবং আমাদের যদি ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, অনেক পরিমাণে খিদা লাগতে পারে, অনেক পরিমাণ তৃষ্ণা লাগতে পারে, অনেক পরিমাণে ক্লান্তি বোধ হয় এমন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তবে আমাদের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত। 

ডায়াবেটিস হলে আমাদের প্রথম শর্ত হল আমাদের মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার খাওয়া চলবে না সেটি হতে পারে মিষ্টি জাতীয় খাবার কিংবা মিষ্টি জাতীয় পানীয়। আমরা যদি শারীরিক পরিশ্রম না করি তবে আমাদের ডায়াবেটিস হতে পারে। 

আবার আমরা যদি অনেক পরিমাণে চর্বি জাতীয় খাবার খাইতে তবে, আমাদের ডায়াবেটিস হতে পারে। এর জন্য আমাদের যে খাবার খাওয়া চলবে না এমন ধরনের খাবার আমরা না খাই।

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ

ডায়াবেটিস হলে অনেক ধরনের লক্ষণ দেখা যায় আমাদের শরীরের মধ্যে। আমরা যদি সেই লক্ষণগুলো চিনে থাকি তাহলে আমরা খুব সহজেই ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা সেই ধারণাটি পেয়ে যাব নিজেরাই। এর জন্য ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো যানা আমাদের খুবই প্রয়োজন। যখন ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো জানতে পারবো তখন আমাদের ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা তা বুঝতে পারবো। 

আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যথার কারণ কি কি- ও কমানোর ঘরোয়া ৫ টি উপায় ও বিস্তারিত 

এবং ডায়াবেটিসের খাদ্য তালিকা জেনে তা অনুযায়ী চলে ডায়াবেটিস ঠিক করে আনতে পারবো। এর জন্য ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো জানা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো হলো:
  • আপনার যদি ডায়াবেটিস হয় তবে আপনি লক্ষ্য করবেন যে আপনার শরীরের ওজন খাওয়া-দাওয়ার তুলনায় একটু বেশি পরিমাণে বেড়ে যাচ্ছে যেটি অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকবে।
  • ডায়াবেটিস হলে আপনি কিছু না করেও ক্লান্তি অনুভব করবেন আবার যদি কোন কাজ একটু করেন তবেও আপনি ক্লান্তি অনুভব করবেন। 
  • ডায়াবেটিস হবার কারণে অনেকে চোখে ঝাপসা দেখে। চোখে ঝাপসা অন্য কারনেও দেখা যায়। তবে ডায়াবেটিস হলে চোখে ঝাপসা দেখাটা স্বাভাবিক। 
  • যদি আপনার ডায়াবেটিস হয় তবে আপনার প্রচুর পরিমাণে পানির তৃষ্ণা লাগবে। 
  • আবার যদি আপনার ডায়াবেটিস হয় তবে আপনার ঘনঘন প্রস্রাব হবে তবে অল্প পরিমাণে।
  • আপনার শরীরে যদি ডায়াবেটিস থাকে তবে আপনার শরীরে যদি কোথাও কেটে-ছিঁড়ে যায় তবে ডায়াবেটিস থাকার কারণে সেটি ঠিক হতে সাধারণ মানুষের থেকে একটু বেশি সময় লাগবে। 
  • ডায়াবেটিস হলে আপনার কোন কাজে মন বসবে না। আপনি অমনোযোগী হয়ে উঠবেন পড়া লেখাতে মনোযোগ বসবে না। আপনি অনেকটা অলস মানুষের মত হয়ে যাবেন।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এমনও নিষিদ্ধ খাবার আছে যেগুলো যদি ডাইবেটিস রোগী খায় তবে তার মৃত্যু হতে পারে। এর জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা আমরা আপনাকে জানাবো। এবং আপনি ভুল করেও এই ধরনের খাবার খাবেন না। যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে। 
যে খাবারগুলো খাবেন না:
  • আমাদের ঘন বা অতিরিক্ত চিনি রয়েছে এমন ধরনের খাবার খাওয়া চলবে না। যেমন আমরা যদি চিনি ছাড়া চা খাই তবে আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু আমাদের কখনোই চায়ে বেশি পরিমাণে চিনি খাওয়া চলবে না। আমরা যদি শুধু চা খাই চিনি ছাড়া তবে সেটি আমাদের জন্য উপকার। 
  • কোমল পানীয় কখনোই খাওয়া চলবে না , এতে করে আপনার ডায়াবেটিস বেশি হয়ে যেতে পারে। যদি তৃষ্ণা লাগে তবে আমাদের আর্সেনিকমুক্ত পানি খেতে হবে। 
  • বেশি পরিমাণে ক্যালোরিযুক্ত ফাস্টফুড খাওয়া চলবে না।
  • আমাদের এমন ধরনের সবজি খাওয়া চলবে না যেটিতে সোডিয়াম থাকে।
  • আমাদের মিষ্টি জুস, এনার্জি ড্রিংস, নিয়মিত সোডা পান করা চলবে না। এর পরিবর্তে আমরা পানি পান করতে পারি বিশুদ্ধ পানি।
  • আমাদের মিষ্টি জাতীয় ফল খাওয়া যাবে না এমন ধরনের ফল যেটি শুকনো থাকে।

যা যা খেলে ভালো 
  • অলিভ অয়েল দিয়ে সালাদ।
  • টমেটো।
  • মাশরুম।
  • শসা।
  • মিষ্টি আল ইত্যাদি।

ঘরোয়া ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা

আমরা যদি আমাদের স্বাস্থ্যের দিকে একটু নজর দেই আর অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বিরত থাকি যেগুলোতে ডায়াবেটিস হতে পারে এমন খাবার। তাহলে আমরা খুব সহজে ঘরোয়া ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। 
আমাদের ঘরোয়া নিয়মগুলো যদি আমরা প্রত্যেকদিন নিয়মিত করি ও মেনে চলি তাহলে আমরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুব সহজেই নিয়ে আসতে পারবো। ঘরোয়াভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হলো:
  • আমরা যদি ঠিক সময় মত খাবার খায় প্রত্যেক বেলাতেই তাহলে আমরা আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবো।
  • আমরা যদি ডায়াবেটিস হবার পরে, কম খাইতে তবেও সমস্যা, আবার যদি বেশি খায় তবেও সমস্যা। এর জন্য আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। 
  • ডায়াবেটিস হলে আমাদের বেশি করে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। আমাদের লাল আটার রুটি খেতে হবে। আবার যদি আমরা ভাত খাই তবে সেটি ঢেঁকি দিয়ে ধান থেকে চাল হয় এমন ধরনের চালের ভাত খেতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ রুটি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ

  • আমাদের অবশ্যই চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং প্রত্যেকদিন ফল ও সবুজ সবজি খেতে হবে। 
  • আমাদের কখনোই কোন অনুষ্ঠানে গিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া চলবে না আমাদের নিজেদের কন্ট্রোল রাখতে হবে। 
  • ডায়াবেটিস হলে আমাদের কখনোই ধূমপান করা চলবে না ধূমপান করার কারণে আমাদের ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পেতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে আমাদের চর্বি জাতীয় কোন খাবার খাওয়া যাবে না, ফাস্টফুড খাওয়া যাবেনা, কোন মিষ্টি বা কোমল পানীয় খাওয়া যাবেনা, আমাদের অনেক পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। 
  • আমাদের নিয়মিত শরীরকে একটু পরিশ্রম করাতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হাঁটাহাঁটি করা।

ডায়াবেটিস ঝুঁকির কারণ

ডায়াবেটিস হল এমন একটি রোগ যেটি যেকোনো ব্যক্তির হতে পারে। শিশু বাচ্চা হোক কিংবা বয়স্ক মানুষ সকলেরই ডায়াবেটিসের সমস্যা হতে পারে। যখন আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চিনি বা গ্লুকোজ জমা হয় আর সেই গুলো শরির ভাঙতে পারেনা। তখনই ডায়াবেটিস এর সমস্যা দেখা দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমন ডাইবেটিস হওয়ার কারণে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
স্টক হতে পারে,ডায়াবেটিস হওয়ার কারণে আপনার কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, আবার ডায়াবেটিস হলে অনেকের দেখা যায় যে শরীরের অনেক অংশ কেটে ফেলে দিতে হয়। পৃথিবীতে ১০ লাখের বেশি মানুষ ডায়াবেটিসের রোগের কারণে বছরে মৃত্যুবরণ করে। এর জন্যই আমাদের ডায়াবেটিস এর রোগ থেকে মুক্তি পেতে হবে।

ডায়াবেটিস কমানোর ব্যায়াম

আমরা কিছু ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবো। এজন্য আমাদের করতে হবে যা তা হলো:
  • হাটাহাটি করা: ডায়াবেটিস হলে সব থেকে ভালো ব্যায়াম হলো হাটাহাটি করা। আমরা যখন হাঁটাহাঁটি করবো তখন আমাদের ডায়াবেটিস কমবে কেননা হাটাহাটি করার মাধ্যমে আমাদের শরীর একটু একটু ভাবে ক্লান্ত হবে। এর জন্য হাটাহাটি করা আমাদের খুব প্রয়োজন ডায়াবেটিস হলে। 

আরো পড়ুনঃ কিডনি ও লিভার ভালো রাখার ৬ টি উপায় ও ৬ টি খাদ্য তালিকার বিস্তারিত 

  • সাঁতার কাটা: আমরা যখন সাঁতার কাটি তখন আমাদের  হৃদ স্পন্দন অনেক বেশি হয়। এবং সাঁতার কাটার মাধ্যমে আমাদের শরীরে অনেক ব্যায়াম হয় যেটি ডায়াবেটিসের জন্য ভালো। তবে আমাদের গরমের সময় সাঁতার কাটা উপকারী। শীতের সময় সাঁতার কাটলে ঠান্ডা লেগে জ্বর সর্দির মত সমস্যা হতে পারে। 
  • সাইকেল চালানো :‌ সাইকেল চালানোর মাধ্যমে আমাদের শরীর অনেক পরিশ্রম করে। এবং ডায়াবেটিস রোগীর পরিশ্রম করা উচিত যে কারণে ডাইবেটিস রোগী সাইকেল চালাতে পারে। 
আমাদের শরীর ঠিক রাখা এবং আমাদের শরীরের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের রাখার জন্য আমাদের ব্যায়াম করা প্রয়োজন। insurance এর ওষুধ এর পরিমাণ কমাতে আমাদের ব্যায়াম করার অভ্যেস করা উচিত। এতে আমাদের শরীরে অনেক রোগ থেকে আমরা মুক্তি পাবো।

ডায়াবেটিস হলে কি কি ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস কমানো যাবে

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ এটির ঔষধ গ্রহণ করার আগে আপনার বয়স, আপনার ডায়াবেটিসের ধরন এবং আপনার ডায়াবেটিস কোন পর্যায়ে আছে এবং অন্যান্য কারণ বিবেচনা করে আপনার ডায়াবেটিসের ওষুধ খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য আমাদের সর্বপ্রথম ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। নাহলে অযথা ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের সমস্যা হতে পারে। 

আমাদের পরামর্শ

আমরা যখনই অস্বাভাবিকভাবে খাবার খাব তখন আমাদের অনেক ধরনের রোগ আমাদের শরীরে আক্রমণ করবে। এর মধ্যে সবথেকে ভয়ংকর রোগ যেটি হবে সেটি হল ডায়াবেটিস। এর জন্য আমাদের খাবারের নিয়ম পালটিয়ে আমাদের স্বাভাবিক নিয়মে খাবার খাওয়া উচিত। 

আমরা যখন পরিমাণ অনুযায়ী খাবার খাব তখন আমরা সুস্থ থাকব। আর আমরা যখন পরিমাণ এর বেশি খাবার খেয়ে ফেলবো তখন আমাদের জন্য সেটি ক্ষতিকারক। এর জন্য আমরা সুষম খাদ্য খাই ভালো থাকি, সুস্থ থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url