পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর সঠিক ঘরোয়া উপায়- ও খাদ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

মেয়েদের পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর প্রত্যেক মাসে পিরিয়ড হয়। এর জন্য একজন নারী হিসেবে জানা প্রয়োজন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর সঠিক ঘরোয়া উপায়- ও খাদ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর সঠিক ঘরোয়া উপায়- ও খাদ্য  সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন


নিচে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ও ঘরোয়া উপায় বর্ণনা করা হয়েছে।

সূচিপত্র ঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়-খাবার তালিকা ও ব্যায়াম.

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর সঠিক ঘরোয়া উপায়- ও খাদ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন 

এর জন্য ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। আমরা যদি ঘরোয়া উপায় পিরিয়ডের ব্যথা দূর করতে পারি তাহলে আমাদের ওষুধ খাওয়ার কোন প্রয়োজন হবে না। এর জন্য ঘরোয়া উপায় জানা প্রয়োজন।

  • অ্যালোভেরার জুস: অ্যালোভেরা জুস করে খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পিরিয়ডের ব্যথা কম হতে শুরু করে এবং এলোভেরা জুস টি মধুর সাথে মিশিয়ে খাইতে হবে। এতে করে আমাদের পিরিয়ডের ব্যথা একটু হলেও কমবে।
  • পানি: আমাদের যখন পিরিয়ড হয় তখন আমাদের শরীরে অনেক পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এই কারণে আমাদের প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে ঠান্ডা পানি। তবে গরম পানি খেলে সমস্যা হতে পারে। এর জন্য গরম পানি খাওয়া যাবে না। শীতল ও ঠান্ডা পানি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেটের ব্যথা কমতে সাহায্য করবে।
  • ল্যাভেন্ডার তেল: পিরিয়ডের সময় পেটে যেখানে ব্যথা করবে সেইখানে ল্যাভেন্ডার তেল দিয়ে ১৫-২০ মিনিট মালিশ করার মাধ্যমে পেটের ব্যথা কমতে পারে।
  • ব্যায়াম: পিরিয়ডের সময় ব্যায়াম করা জরুরী ব্যায়াম করার মাধ্যমে পেটের ব্যথা কমতে সাহায্য করে। এ সময় আপনি স্বাভাবিক যে ব্যায়ামগুলো আছে সেগুলো করতে পারেন হাঁটাচলা, যোগব্যায়াম ব্যায়াম। তবে এর সময় ভারী কোন কাজ কিংবা ভারি ব্যায়াম  করা উচিত নয়।
  • গরম পানি সেঁক: পিরিয়ডের সময় গরম পানি সে পেটে দিলে পেটের ব্যথা দূর হয়। স্বাভাবিক গরম পানি একটি হট ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে পেটে সেঁক দিতে পারেন। কিংবা গরম পানিতে গোসল করে পিরিয়ডের সময়ে পেটের ব্যথা দূর করতে পারেন।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার

পিরিয়ডের সময় কিছু খাবার খাওয়ার  মাধ্যমে আমাদের পেটের ব্যথা ঠিক হতে সাহায্য করে। যেমন:

  • আদা: পিরিয়ডের সময় আদা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেটের ব্যথা ঠিক হতে সাহায্য করবে। আদা হলো একটি সক্রিয় উপাদান অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি আমাদের সারা শরীরে সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
  • দারুচিনি: দারচিনি হলো পিরিয়ডের ব্যথা দূর করার একটি অন্যতম উপাদান। আমাদের যখন পিরিয়ডের সময়ের শরীল থেকে রক্ত বেরিয়ে যায়। সেই রক্ত পূরণ করার জন্য দারুচিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।এবং এটি পিরিয়ডের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
  • পেঁপে: পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য পেঁপে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। এটি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেটের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ খাবার হিসেবে থাকবে। কাঁচা পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পিরিয়ডের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তাই পিরিয়ডের সময় কাঁচা পেঁপে খাওয়া প্রয়োজন।
  • সবুজ শাকসবজি: পিরিয়ডের সময় আমাদের বেশি পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। কেননা আমাদের শরীরে পিরিয়ডের সময় অনেক রক্ত বেরিয়ে যায়। এর জন্য আমাদের এই সময়ে রক্ত উৎপন্নকারী খাবার খাওয়া উচিত। সবুজ শাকসবজি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পিরিয়ডের সময় যে ক্লান্তি এসেছে তা দূর হয়ে যাবে।
  • ফল: পিরিয়ডের সময় তরল পানি রয়েছে এমন ধরনের ফল খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এইসব ফলের মধ্যে পানি থাকার কারণে আপনার শরীরে পানি শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করবে। এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের যে ক্ষয় রয়েছে সেগুলো পূরণ করতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে আপনি খেতে পারেন। তরমুজ, আপেল, শসা, গাজর ইত্যাদি।
  • ডার্ক চকলেট: পিরিয়ডের সময় শরীরে অনেক ধরনের আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। এর জন্য আমাদের ডার্ক চকলেট খাওয়া প্রয়োজন। ডাক চকলেট খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে যে আয়রনের ঘাটতি গুলো হয় পিরিয়ডের সময়। সেগুলো পূরণ করতে সাহায্য করে। ও আমাদের মেজাজ ও পেট দুটোই শান্ত রাখে
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় ও খাবার সম্পর্কে জানলাম। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর বিষয়ে ব্যায়াম ও আরো অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য দেওয়া রয়েছে নিচে।

পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয়

যখন আমাদের পিরিয়ড হয়, তখন জরায়ু সংকুচিত হয়ে আমাদের শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে আসে। তখন এই রক্তের কারনে আমাদের মাথা ঘোরার মতো অনুভূতি সৃষ্টি হয়। আমাদের যখন পিরিয়ড হয় তখন জমাট বাধার রক্ত গুলো শরীর থেকে বের হয়ে আসে। 

সেই রক্তের সাথে জরায়ুর টিস্যু  থেকে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বেরিয়ে আসে রক্তের সাথে। যার কারণে আমাদের পেট ব্যথা হয় পিরিয়ডের সময়।  

আরো পড়ুনঃ পেটে ব্যথা হলে করণীয় কি - পেটে ব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায় ও বিস্তারিত জানুন

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়

মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের পিরিয়ড দিয়েছেন এবং তিনি এই পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়ার মালিক। তার জন্য আমাদের ইসলামী পদ্ধতিতে এই পিরিয়ডের ব্যথা দূর করার উপায় জানা জরুরী। আমরা প্রথমত একটি গ্লাসে এক গ্লাস পরিমাণ পানি নিবো। 

তারপর দরুদ ( ইব্রাহিম) পড়ব একবার, তারপর  আল্লাহর গুণবাচক নাম "আল আজীমু" সাতবার পড়ার পরে, ক্লাসের পানির মধ্যে তিনবার ফু দিয়ে তারপরে সেই পানিটি বিসমিল্লাহ বলে আল্লাহর নামে পান করতে হবে। এবং মনে করতে হবে আল্লাহ এটি থেকে মুক্তি দেওয়ার মালিক। আশা করা যায় আল্লাহ আপনাকে পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি দিবে।

পিরিয়ডের ব্যথা কতদিন থাকে

পিরিয়ড চলাকালীন প্রত্যেকটা সময় যেন প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথার সম্মুখীন হতে হয়। একটি নারীর সবসময়ের জন্য ব্যথাটি একই থাকে না, মূলত ৭২ ঘন্টা কিংবা এর চেয়ে বেশি সময় পরে ব্যথা টি আস্তে আস্তে কমতে থাকে। 

তবে প্রত্যেকটা নারীর ক্ষেত্রে একই হয় না। কোন কোন নারীর বিষয়টা আলাদা আবার কোন কোন নারীর বিষয়টা আলাদা। কারও বেশি ব্যথা হতে পারে, আবার কারো কম ব্যথা হতে পারে। কারো ব্যথা অনেক দ্রুত সেরে যেতে পারে, আবার কারো ব্যথা পুরো পিরিয়ড জুড়ে চলতে পারে।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম

পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের পেট যে ব্যথা হয়। সেই ব্যথার পরিমাণটা ব্যায়াম করার মাধ্যমে দূর করা যেতে পারে। আমাদের যখন পিরিয়ড হয় তখন ব্যায়াম করার ইচ্ছা থাকে না বললেই চলে। কেননা প্রচন্ড পেট ব্যথার কারণে আমাদের তখন কোন কিছুই ভালো লাগেনা। তবে ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের পেট ব্যথা কমতে পারে‌। 

মেয়েদের পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
এর জন্য আপনি যদি কোন ধরনের ব্যায়াম না করতে পারেন। তাহলে আপনি একটু হাঁটাহাঁটি করতে পারেন এতে করে ব্যায়াম করার  কার্যকারিতা হবে। কিংবা আপনার যদি পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা হয়। তাহলে যেইখানে ব্যথা হবে তার চারপাশে হালকা করে মাসাজ করার মাধ্যমে আপনার ব্যথাটি কমতে সাহায্য করবে ব্যায়াম।

পিরিয়ডের সময় যে খাবার গুলো খাওয়া যাবে না

পিরিয়ডের সময় কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের দেখা দিতে পারে নানা ধরনের সমস্যা। এর জন্য পিরিয়ডের সময় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা আমাদের উচিত। যেমন:

  • পিরিয়ডের সময় চর্বি বা ফ্যাট  যুক্ত খাবার না খাওয়াই উত্তম। কেননা পিরিয়ডের সময়তে এসব খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের‌ অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন বাড়ে।
  • পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত লবণ, মসলা না খাওয়া ভালো এগুলো খাওয়ার মাধ্যমে পেটের ব্যথা অতিরিক্ত হতে পারে। এজন্য এগুলো এড়িয়ে চলা উত্তম।
  • চা, কফি কিংবা দুধ জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে পিরিয়ডের সময়। যেমন: পনির, চিজ ,আইসক্রিম এগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।

আমাদের পরামর্শ 

প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষন পিরিয়ডের ব্যথা দূর করার বিষয়ে ও খাদ্য তালিকা বিষয়ে জানলাম। আপনার যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় তবে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সুস্থ থাকি ভালো থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url