মনোযোগ বৃদ্ধির সঠিক ৯ টি উপায় ও বিস্তারিত জানুন

আমরা অনেকেই আছি মনোযোগের কারণে কোন কাজ ঠিকমতো করতে পারি না।  এর জন্য মনোযোগ বৃদ্ধির সঠিক ৯ টি উপায় ও বিস্তারিত জানুন ।

মনোযোগ বৃদ্ধির সঠিক ৯ টি উপায় ও বিস্তারিত জানুন

নিজে মনোযোগ বৃদ্ধির সকল নিয়ম ও আর টি উপায় দেওয়া আছে যেটির মাধ্যমে আপনি আপনার মনোযোগ সম্পন্ন নিজের মন মত করে ব্যবহার করতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ বৃদ্ধির সঠিক উপায় ও বিস্তারিত,

মনোযোগ বৃদ্ধির সঠিক ৯ টি উপায় ও বিস্তারিত জানুন 

মোবাইল ফোন সবথেকে বড় শত্রু

মোবাইল থেকে আসা মেসেজ নোটিফিকেশন এইসব এসে শুধু আপনাকে ডিস্ট্রাক করে । এর জন্যই আপনি মোবাইল ফোন হয়তোবা বন্ধ রাখুন নাইলে সাইলেন্ট মুডে রাখুন,  নাইলে আপনার থেকে দ্রুত জায়গা রাখুন।
এবং অ্যাপ গুলো থেকে নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখুন, সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপ গুলো যদি আপনি ডেস্কটপ রাখেন মনোযোগ বাড়াতে আপনার একটু হলেও সাহায্য করবে।

মেসেজ বা মেইল ইত্যাদি অ্যানসারিং

মেসেজ,কল ,কমেন্ট কিংবা মেইল অ্যানসারিং ইত্যাদি যে কাজগুলো প্রত্যেকে দিন করতে হয় তার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে নিন। সেটি হতে পারে সকালে. দুপুরের কোন এক সময় কিংবা রাতে এতে করে আপনার বাকি কাজের সময়ের কোয়ালিটি অনেক গুণ বেড়ে যাবে।এইসব অ্যানসারিং করতে গিয়েই আপনি আপনার মনোযোগের কোয়ালিটি নষ্ট করে ফেলছেন।

মনোযোগের জন্য খাবার

মনোযোগের ক্ষেত্রে খাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । Neuroscientist দের গবেষণায় দেখা গেছে ,সকালে যারা  সময়মতো পুষ্টিকর খাবার দিয়ে দিন শুরু করে তাদের মনোযোগের ক্ষমতা সেসব মানুষদের  চেয়ে বেশি  যারা পুষ্টিকর খাবার দিয়ে দিন শুরু করে না।

আরো পড়ুন আবেগ নিয়ন্ত্রণ - নিজেকে নিয়ন্ত্রণের উপায় কি? তা বিস্তারিত জানুন

বসা কিংবা দাঁড়ানোতে মনোযোগ বৃদ্ধি

এমন ভাবে বসুন বা দাড়ান যাতে করে সহজেই মনোযোগ দিতে পারবেন শরীরকে শিথিল করে দিন। অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়ায় শক্তি অপচয় করবেন না। আপনি যখন মসজিদে ঢোকেন তখন আপনি মসজিদের বাইরে জুতা খুলে খালি পায়ে ভেতরে ঢুকেন।

তেমনি করে আপনি যে কাজটাই মনোযোগ দিতে চান আপনি আপনার দেহ দরজার বাইরে রেখে এসে শুধু মনটা নিয়েই থাকুন।আপনি যদি একটি  হীরা বা মনি কাটার মনিকারের দিকে ভালো করে লক্ষ্য করেন ,তাইলে দেখবেন যে তার অপ্রয়োজনীয় কোন কাজ নেই তিনি শুধু হীরা কাটাতেই মনোযোগ দিয়ে থাকেন।

আমরা পড়তে বসলে বা অন্য কিছু করার সময় হাত নাড়াচ্ছি, পা নাড়াচ্ছি হাত দিয়ে কোন কিছু বানাচ্ছি অপ্রয়োজনীয় এইসব কাজগুলি আমাদের কে করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনার যখন মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন তখন এমনভাবে বসুন।

যেভাবে বসলে মনোযোগ নিবিষ্ট করা সহজ পেসি গুলোকে শিথিল করে দিন এবং আরামে বসুন, চেয়ারে বসলে এমনভাবে বসুন যেন পা মেঝেতে লেগে থাকে এবং যাতে মনোযোগ দিতে চান তা সামনে রেখে কয়েক মিনিট এইভাবে বসুন তাইলে আপনার মনোযোগ নিবিষ্ট হবে।

মনোযোগের ক্ষেত্রে পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ

মনোযোগের ক্ষেত্রে পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বেশি। যারা ছাত্রছাত্রী আছেন তারা খেয়াল রাখতে পারেন পড়ার টেবিল টা কে দেয়াল মুখো করে  রাখতে।পড়ার টেবিল থেকে  শো পিস বা যে জিনিস গুলো মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারে ,এমন সব জিনিস গুলো পড়ার টেবিলের সামনে থেকে সরিয়ে রাখুন।

 চেষ্টা করুন একই জায়গায় সব সময় পড়ার। আর পড়ার টেবিলটা  অন্য আর কোন কাজে ব্যবহার করবেন না।একইভাবে বিছানায় শুয়ে বা বসে পড়ার অভ্যাস করবেন না, টিভির সামনে বসবেন না। পড়ার কাজে যেগুলো প্রয়োজন সে গুলি নিয়ে তারপরে পড়তে বসুন, না হলে বারবার সেটি নিতে উঠতে গিয়ে আপনার মনোযোগ নষ্ট হবে।

মনোযোগের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ আগ্রহ

গল্পের বই বা পছন্দের মুভিতে মনোযোগ দেয়ার জন্য মন কে শক্তি প্রয়োগে বাধ্য করতে হয় না। আপনি যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন তার প্রতি মনোযোগ দিতেও আপনাকে বলে দিতে হয় না। তাই যেকোনো বিষয়ে মনোযোগ বাড়াতে হলে কাজের মজা দিকগুলো খুঁজে বের করুন।

একে আপনার অন্যান্য আগ্রহ বা  হবির সাথে যুক্ত করুন ।আগ্রহ আবার নির্ভর করে দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুসন্ধিৎসার ওপর।  দৈনন্দিন কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর ফলে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে। কিছু পরিষ্কার করা আপনি যদি ভাবেন প্রত্যেকদিন নোংরা ঘাঁটছেন ,তাইলে এই কাজে আপনার বিরক্তি ছাড়া
আর কিছুই আসবে না।

এমনটা ভাবেন  যে আপনার নোংরা একটি জিনিস পরিষ্কার হচ্ছে  এমনটা ভাবার কারণে আপনার ওই কাজটির ওপরে আপনি আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

অফিস বা কাজের ক্ষেত্রে আগ্রহ বাড়ানো

প্রথমত আপনি কাজের আকর্ষণীয় দিক গুলো খুজে বের করুন।কাজের মধ্যে নতুন বা উৎসাহিত জনক কি আছে  জানা-অজানা বিষয়ের বিশ্লেষণ বের করুন ও এর মধ্যে পার্থক্য বের করুন ।মনকে যখনই একটা বিষয়ের সাথে অপর বিষয়ের  সংযোগ করতে দেবেন  প্রথমে যা বিরক্ত লেগেছিল সেই বিষয়টি তখন আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

মনোযোগে মানসিক প্রক্রিয়া

মনোযোগের জন্য বিশেষ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করুন। সুস্পষ্টভাবে আপনার কাজকে চিহ্নিত করুন। লক্ষ্য স্থির রাখুন মানবিক ছদ্ম সৃষ্টি করুন। যাতে আপনার কাজে একটা গতি সৃষ্টি হয়। দিনের  কাজ শুরু করার আগে একটু থামুন, আপনার চিন্তা ধারা ঠিক করে নিন, মানসিকভাবে তৈরি হয়নি,

নিজের  কর্মসূচির দিকে তাকান ,কর্মসূচির তালিকা থেকে খুঁজে বের করুন,আপনার সবথেকে জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ কোনটি ?সেই কাজটি প্রথমে করুন। তারপরে আবার খুঁজে বের করুন আপনার কর্মসূচির ভেতরে আর কোন?

কাজটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ আগে সেই কাজটি করুন। যখন সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ হয়ে যাবে ।তখন তুচ্ছ কাজগুলি করুন। বড় বড়  কাজকে ছোট ছোট কাজে বিভক্ত করুন এতে আপনার মনোযোগ নষ্ট কম হবে।

নিজের সময় তৈরি করুন

ভেবে দেখুন সকালে, দুপুরে, বিকেলে কিংবা রাতে কোন সময়তে আপনার মন  সজাগ ও সৃজনশীল থাকে।কোন সময়তে কাজ করলে আপনি বেশি আনন্দ পান ও মজার সহিত কাজটি শেষ করে ফেলেন। কাজটি কেমন এইটা ভাবতে কখন আপনার ভালো লাগে,

আপনার মনের সাথে মিলিয়ে একটি কাজের সময় নির্ধারণ করুন। যখন কাজে আনন্দ ও মনোযোগ দেয়া হয় তখন অনেক সহজ হয় ওই কাজটি করতে। সময় নির্ধারণ করার কারণে আপনি নিমিষেই কাজটি শেষ করে ফেলবেন।

মনোযোগ আসলে কি

ফর্মুলা ওয়ান ড্রাইভার, যুদ্ধ বিমানের পাইলট, দাবার গ্র্যান্ড মাস্টার অথবা লম্বা সময়ের সার্জন এই পেশার মানুষগুলির তাদের মনোযোগের জন্য বিখ্যাত। আমাদের উচিত যে মনোযোগ বৃদ্ধি ও ধরে রাখার পদ্ধতি গুলো দারা জীবন পরিচালনা করা, যাতে করে আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। সোশ্যাল মিডিয়ার আর টেক কোম্পানির মূল উদ্দেশ্য হল আপনার মনোযোগ বিক্রি করা।

মনোযোগই হচ্ছে এই পৃথিবীর বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আর স্কিল গুলির একটি মনোযোগ। কোন কিছু মনে রাখতে কোন কিছু শিখতে সাহায্য করে মনোযোগ দিতে পারলে আমাদের সময় বাঁচে। আজকে আমরা জানবো কোন কোন কৌশলে অবলম্বন করলে আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি ও ধরে রাখতে পারা যাবে।

আমরা যখন এটেনশন বা মনোযোগের কথা বলি একটি ইনফরমেশন বিষয়ে সচেতন হওয়া বুঝিয়ে থাকি ।ইনফরমেশন মানে ইন্দ্রিয়, চোখ, কান এসব থেকে পরিবেশ থাকে নানা information আসে। অথবা আমাদের ব্রেইন এর মধ্যে চিন্তা বা আবেগ আসে এসবও আমরা ইনফর্মেশনের  সোর্স হিসাবে ধরতে পারি।

তো আপনি যখন পরিবেশ থেকে আসা ইনফর্মেশনের সচেতন হন। আপনার চিন্তা বা আবেগ সম্পর্কে সচেতন হয়।তখন আপনি বলতে পারেন যে আপনি মনোযোগ দিয়েছেন আর কনসেনট্রেশন টি হল আপনি যখন দীর্ঘ সময় ধরে মনোযোগ টি একটি বিষয়ের উপরে দেন।

ধরেন আপনি একটি বই পড়ছেন বিশটা লাইন আছে ,আপনি একটি লাইনের ওপরে মনোযোগ দিলেন, এইটা হচ্ছে অ্যাটেনশন আর আপনি যখন একটি বইয়ের একটির  পর একটি পাতা ১০-১৫ মিনিট ধরে পড়ছেন এটি হচ্ছে কন্সেন্ট্রেশন। অতএব আপনি অনেক লম্বা সময় ধরে মনোযোগ টি ধরে রেখেছেন।

আরো পড়ুন মাথা ব্যথার কারণ কি কি- ও কমানোর ঘরোয়া ৫ টি উপায় ও বিস্তারিত

মনোযোগ ধরে রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ

স্মৃতি গঠনের সাথে আমাদের মনোযোগ ধরে রাখার একটি সম্পর্ক আছে। আমরা যখন কোন ইনফরমেশন বাইরে থেকে আমাদের ব্রেইনের মধ্যে নেই, তখন মনোযোগের প্রয়োজন হয়। আমরা যদি মনোযোগ না দেই তাইলে আমাদের এই ইনফরমেশনটা ব্রেইনের মেমোরি হিসেবে থাকে না।
ধরেন আপনাকে একটি বাজারের লিস্ট দেওয়া হল আপনি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন এইটা মনে রাখতে পারবেন আর আপনি যদি একবারই পড়েন মনোযোগ না দিয়ে তাইলে আপনি এইটা মনে রাখতে পারবেন না।

ছোট বাচ্চারা বলে যে তারা কোন কিছুই মনে রাখতে পারছে না,সমস্যাটা তাদের ব্রেইনে না সমস্যাটা হলো তারা ঠিকমতো মনোযোগ দেয় না । আমরা যখন কোন কিছু শিখার চেষ্টা করি তখন মনোযোগ টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের পরামর্শ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আপনার মন এমনি হাসিখুশি থাকবে । মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় গুলির সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে আপনার অনেক বেশি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url