রুটি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ
আমরা সকলে নিয়মিত রুটি খাই কিন্তু আমরা জানি না যে এর উপকার বা উপকারিতা কি কি ? তাই নিচে রুটি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ। সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
রুটি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ
উপকারিতা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের রোগের কোন অভাব নেই। আমাদের জীবনে একটি রোগ কাটতে না কাটতে আরেকটি রোগ সৃষ্টি হয়ে যায়। এর মধ্য দিয়েও আমরা আমাদের জীবন গড়ে তুলতে পারি রোগহীন ভাবে। এর জন্য আমাদের তিন বেলা ভাত না খেয়ে নিয়মিত দুই বার সকালে ও রাতে রুটি খাওয়ার প্রচলনটি জারি করতে হবে।
কারণ রুটি আমাদের দেহ ঠিক ও সবল রাখতে সাহায্য করে। আপনি যখন শাকসবজি দিয়ে গমের আটার রুটি খাবেন। তখন যদি আপনার শরীরে কোন বাতের ব্যথা থাকে তাহলে আপনার শরীরের বাতের ব্যথা, রুটি খাওয়ার মাধ্যমে দূর হয়ে যাবে। আমাদের ব্লাড প্রেসার রুটি খাওয়ার মাধ্যমে ঠিক রাখা যেতে পারে।
আমাদের ব্লাড প্রেসার ঠিক থাকার মাধ্যমে আমাদের হার্টের সমস্যা হওয়ার সম্ভাব না কমে যায়। গমের আটাই থাকা ডায়াট্রিক ফাইবার। আমাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে থাকে রুটি । আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে গমের আটার রুটি।
আমাদের ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, আমরা যদি আমাদের শরীরে ফিটনেস ধরে রাখতে চাই তাহলে আমাদের গমের আটার রুটির । দিনে তিন থেকে দুইটা খাওয়া প্রয়োজন এতে আমাদের কোষ শক্ত ও গঠন হতে সাহায্য করে।
অপকারিতা
আমরা শুধু রুটি খাইলে আমাদের দেহে পুষ্টি হবে না । ভুল নিয়মে যদি আমরা রুটি খাই তাহলে আমাদের শরীরে উপকারের বদলে ক্ষতি হবে। প্রথমত আমাদের ময়দার রুটি খাওয়া যাবে না। এটি সাদা করার জন্য অনেক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে এই আঠাটি সাদা করা হয়।
এর জন্য এর মধ্যে কোন ধরনের পুষ্টি থাকে না। যে কারণে এটি আমাদের শরীরে কোন কাজে আসে না। বরং আমাদের হজম শক্তি নষ্ট করে দেয়। এবং শরীরে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য আমাদের লাল গম এর আটার রুটি খেতে হবে। এবং তাওয়া ব্যবহার করে তারপরে সেই রুটিটি তৈরি করতে হবে।
না হলে আমাদের শরীরে কোন উপকার হবে না। এর পরের রুটি তে কোনো ধরনের তেল বা ঘি ব্যবহার করা যাবে না, এতে আমাদের কোন উপকার আসবে না। আমরা যদি মনে করি অতিরিক্ত রুটি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে এটি ভুল ধারণা আমাদের সুস্বাস্থ্য অনুযায়ী আমাদের তিনটির বেশি রুটি খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সকালে রুটি খেলে কি হয়
ভাতের বদলে আমরা যদি সকালবেলায় রুটি খাই। তাহলে আমাদের শরীরে অনেক রকম পরিবর্তন হতে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের জীবনধারাই বদলে যাবে।একটি সুস্থ মানুষ তার সুস্থতার জন্য কি না করে ? রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। আবার অনেক রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
আরো পড়ুনঃ মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও উপকারিতা কি বিস্তারিত জানুন
ভাতের তুলনায় রুটিতে ফ্যাট কম থাকে।এর কারণে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। একটি ফিটনেস শরীর কে না চায়। আমরা তিন বেলায় ভাত খাওয়ার ফলে শরীরে বেশি পরিমাণে ফ্যাট জন্মায়।যে কারণে আমাদের শরীর ফিটনেস ধরে রাখতে পারেনা।
এবং আমরা মোটা হয়ে। তাই শরীর দুর্বল লাগে এর জন্যই আমাদের তিন বেলায় ভাত খাওয়া উচিত নয়।সকালে রুটি ,দুপুরে ভাত, আবার রাতে রুটি খাওয়া উত্তম।
রাতে রুটি খাওয়ার উপকারিতা
রাতে মূলত আমরা কোন কাজ করি না , খাওয়া দাওয়া করি তারপরে ঘুম যাই। যেহেতু আমাদের রাতে কোন কাজ করা লাগে না। এজন্য আমাদের শরীর ও ক্লান্ত হয় না। এর জন্যই যদি আমরা রাতে ভাত খাই। তাহলে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বা মহিলার যে ক্যালরি প্রয়োজন।
তার চেয়ে যখন তার শরীরে বেশি ক্যালরি হয়ে যাবে ,তখন তার শরীর খারাপ করবে।রুটিতে রয়েছে কম ক্যালরি এর কারণে আমরা যদি রাতের রুটি খাই , তাহলে আমাদের হজম করতে কোন সমস্যা হবে না।রুটি আমাদের পেটে সহজে হজম হয়ে যাবে। যেহেতু রাতে আমাদের কোন কাজ করা লাগে না , অতএব আমাদের শরীর ক্লান্ত হয় না এর জন্য রাতে
আমাদের রুটি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।রুটির পরিবর্তে যদি আমরা ভাত খাই তাহলে এটি আমাদের হজম হতে সমস্যা হতে পারে।যেহেতু আমরা রাতে কোন পরিশ্রম করি না ,আমাদের দেহ ক্লান্ত হয় না, এর জন্য আমাদের রাতে কম ক্যালরি সম্পূর্ণ খাবার খাওয়া লাগবে ,তাই রাতে রুটি খাওয়া ভালো।
দুধ রুটি খাওয়ার উপকারিতা
দুধ হল আমাদের নিত্য দিনের রাতের শেষ খাবার। মূলত আমরা দুধ খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়ি। যদি আমরা দুধ দিয়ে রুটি খাই , তাহলে আমরা এর মধ্যে পাবো অনেক ধরনের পুষ্টি।যে পুষ্টি আমরা কল্পনাও করতে পারি না। দুধ দিয়ে রুটি হয়তো বা মজার না, তারপরেও দুধ দিয়ে রুটি খাওয়ার কারণে আমরা পেতে পারি অনেক ধরনের ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন।
দুধ দিয়ে রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের হার শক্ত হয়।আমাদের শরীরে যদি রক্তশূন্যতা থেকে থাকে, তাহলে দুধ দিয়ে রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের রক্তশূন্যতা দূর হয়ে যাবে। রুটিতে থাকা ফাইভার ও প্রোটিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।দুধ দিয়ে রুটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
কারো যদি কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা করতে সমস্যা হয়। তাহলে তিনি রাতে দুধ দিয়ে রুটি খাইতে পারেন। এতে করে আপনার পায়খানা ক্লিয়ার হবে।পায়খানা ক্লিয়ার হওয়ার মানে আপনার পেট সুস্থ থাকবে। দুধ ও রুটি প্রত্যেকদিন সকালে ও রাতে খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে যে টিস্যু হয়েছে। সেই টিস্যু মেরামত করতে ও সাহায্য করে। এর জন্য শাকসবজি কিংবা মাংস দিয়ে রুটি খাওয়ার থেকে দুধ দিয়ে রুটি খাওয়া উপকারী।
প্রতিদিন রুটি খেলে কি হয়
প্রতিদিন সকালে ও রাতে রুটি খাওয়ার ফলে প্রথমত আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। আমাদের যখন স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে, তখন আমাদের জীবন আনন্দময় হয়ে উঠবে। কারণ অসুস্থতা কখনোই আনন্দের কারণ হয় না। রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের হার্ড ভালো থাকে। রুটিতে বেশি পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন থাকার ফলে রুটি আমাদের দেহে শক্তি উৎপাদন করতে বেশি সহায়তা করে।
রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের পেটে বেশিক্ষণ ভরে থাকে ।অল্প সময়ের মধ্যেই রুটি খাওয়ার মাধ্যমে যে শক্তি উৎপন্ন হয়। প্রতিদিন রুটি খাওয়ার ফলে চর্বি বা ফ্যাক্ট কমে যায়। এতে আমাদের পেটে কোন চর্বি থাকে না। পেটে চর্বি কমে রুটি খাওয়ার ফলে। আমরা খুব পরিশ্রম করার ফলেও আমরা বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়বো না।
কারণ এটিতে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রাখে ও আমাদের সুস্থ ঠিক রাখে। আমরা তিন বেলায় ভাত খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ফ্যাট সৃষ্টি হয়।এর ফলে আমরা কিছুক্ষণ দৌড়ানো বা একটু পরিশ্রম করার ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। রুটি খাওয়ার ফলে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন সুস্থ ও সঠিকভাবে পরিচালনা ও সুন্দর জীবন যাপন করতে পারব।
রুটি খেলে কি মোটা হয়
তিন বেলায় অতিরিক্ত ভাত খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমান বৃদ্ধি পায়। একটি পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ মানুষের ২৫০০ ক্যালোরি খাবার খাওয়া প্রয়োজন প্রত্যেকদিন। আরেকটি প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রত্যেকদিন 2000 ক্যালোরি খাওয়ার খাওয়া প্রয়োজন। আমরা যখন প্রত্যেকদিন তিন বেলা ভাত খাই।এর ফলে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বেশি হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ শরীর দুর্বল থেকে দ্রুত মুক্তির ৫ টি উপায় ও বিস্তারিত
যখন পুরুষ মানুষের ২৫০০ ক্যালোরি চেয়ে বেশি ক্যালোরি সে খেয়ে ফেলে তখন তার শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় এবং সে মোটা বা ফুলে যাওয়া সম্ভাব না রয়েছে তার। একই ভাবে একটি নারী যখন ২০০০ ক্যালরির বেশি খাবার খেয়ে ফেলে তখনও তার মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাব না রয়েছে।
রুটি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক থাকে। এর জন্যই আমরা মোটা হব না বরং আমাদের শরীরের চর্বি কমে যাবে।
রুটি খেলে কি ওজন কমে
প্রিয় পাঠক, আপনি কি রুটি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ। আমাদের ধারণা একদমই ভুল যে তিন বেলা যদি আমরা রুটি খাই, তাহলে আমাদের ওজন কমবে কিন্তু না আমরা যদি তিন বেলায় রুটি খায় তাহলে আমাদের শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জন্য আমাদের দুই বেলা রুটি খাওয়া যেতে পারে। এবং দুধ রুটি খাওয়ার উপকারিতা
সকালে ও রাতে রুটি খাইতে পারা যেতে পারে আবার দুপুরবেলায় ভাত খাওয়ার যেতে পারে। কিংবা সকালে ও দুপুরে ভাত খেয়ে রাতে রুটি খাওয়া যেতে পারে।এতে করে আমাদের শরীরের ওজন কমবে ,যদি আমরা তিন বেলা ভাত খাই বা তিন বেলায় যদি রুটি খায় তাহলে আমাদের ওজন কমবে না।
বাসীর রুটি খাওয়ার উপকারিতা
আমরা মূলত কেউ বাসি খাবার খেতে চাই না। কারণ বাসি খাবার খেলে পেটের মধ্যে জন্ম নিতে পারে নানান রোগ। কিন্তু রুটির ক্ষেত্রে তা নয়, বাসি রুটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে উপকারিতা রয়েছে।বাসি রুটি আমাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
আমাদের হজমের ক্ষমতা রাখে ঠিকঠাক। তবে সেই বাসি রুটিটি বেশি দিনের বাসি হওয়া যাবেনা, সেই রুটিটি একদিনের বাসি হলে যথেষ্ট ,বেশি দিনের বাসি রুটি হলে এটি আমাদের শরীরে সমস্যা হতে পারে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url