এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ৮ টি উপায় ও বিস্তারিত জানুন

এসি ব্যবহার করে মাসে শেষে যে একটা ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ বিল। আমাদের পরিশোধ করতে হয় সেটি পরিমাণের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এখন এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর  উপায় ও বিস্তারিত জানুন।             
এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর ৮ টি উপায় ও বিস্তারিত জানুন

                         

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর  উপায় ও বিস্তারিত জানুন

দৈনন্দিন জীবনে এসির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই এসির ব্যবহার করতে গিয়ে খরচ করতে হয় আমাদের বেশ কিছু টাকা। আমরা যদি নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করি তাহলে আমাদের এসির খরচ কিছুটা হলেও কমবে। তাতে করে আমাদের জীবন ধারা আরো উন্নত হবে।

এসি চালালে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে কিন্তু অনেকেই এসি চালান কিন্তু জানেন না যে , কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখলে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে ? আর কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে ? নিজের ইচ্ছামত যদি আপনি এ টেম্পারেজ কমিয়ে রাখেন।
 
তাহলে মাসে শেষে গুনতে হবে আপনাকে অনেক মোটা অংকের টাকা। 
  1. এসি দিয়ে যদি আপনি অনেক দ্রুত রুমকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করবেন এবং এসির টেম্পারেজ অনেক কমিয়ে রাখেন। যাতে করে অনেক দ্রুত রুম ঠান্ডা হয়ে যায়। এই কারণে আপনার বিদ্যুৎ বিল একটু বেশি আসবে।
  2. এর জন্য এসি চালু করার সাথে সাথেই আপনি 28 ডিগ্রি থেকে এসি চালু করবেন। তারপরে আস্তে আস্তে একটু কমিয়ে 26-25 -24 -23 এইভাবে কমিয়ে আপনার সুবিধা মতো সেটাকে রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে একটু আস্তে আস্তে আপনার রুমটি ঠান্ডা হবে কিন্তু আপনার বিদ্যুৎ বিল ও সাশ্রয় হবে।
  3. দরজা জানালা এসি চালানোর সময় বন্ধ রাখা। আবার যখন রুম ঠান্ডা বা গরম হয়ে যাবে তখন দরজা জানালা বন্ধই রাখতে হবে। নয়তোবা ভেতরের আবহাওয়া বাইরে চলে যাবে। 
  4. সঠিক সময়ে এসি সার্ভিসিং করতে দেওয়া। কেননা যখন আপনি এসি সার্ভিসিং করতে দিবেন তখন সেখানকার যন্ত্রপাতি ঠিক থাকবে। নয়তোবা সেগুলো চলাইতে অনেক কারণ বিল পুড়বে। 
  5. বেশি চালানোর সময় অযথা বেশি লাইট কিংবা ফ্যান  চালানো থেকে বিরত থাকুন।
  6. এসির ফিল্টার পরিষ্কার করুন। এসে ফিল্টার পরিষ্কার করার মাধ্যমে হাওয়া টা বের হতে পারে ভালো মতো করে। তাই এসির ফিল্টার পরিষ্কার করা উচিত। 
  7. এসিতে টাইম সেট করে রাখো না ভাবা গরম কিংবা ঠান্ডা হলে সেটি অটোমেটিক বন্ধ বা চালু হবে এমনটা। 
  8. যখন অনেক বেশি মানুষ একটি রুমে মধ্যে থাকবে। তখন এসিকে সেই রুমটি ঠান্ডা কিংবা গরম করতে অনেক সময় লাগে। যে কারণে এসির বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে।
প্রিয় পাঠক আপনার জানার সুবিধার্থে যে এসি কতক্ষণ চালালে কত টাকা বিল আসবে? এবং এসি স্বাস্থ্যের জন্য কেমন তা তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি পুরো উপকৃত হবেন।

এক টন এসির বিদ্যুৎ খরচ কিভাবে বুঝবেন

আপনার বাসাতে যদি একটি এক টন এসি থাকে। তাহলে আপনার একটি রুমকে এক টনের এসি , ঠান্ডা করতে প্রায় এক ঘণ্টার মতো সময় নিবে। এই এক ঘন্টাই আপনার কত টাকা খরচ হইল সেটি জানার জন্য হিসাব করতে হবে।

আপনার কত টাকা খরচ হল , সেইটা বের করার জন্য আপনাকে আপনার এসি কত ওয়ার্ডের সেটির সাথে আপনার এসি কতক্ষণ চলবে সেটি গুণ করতে হবে। গুণ ফল যত ওয়ার্ড হবে সেটিকে কিলো ওয়ার্ডের রূপান্তরিত করতে হবে।
 
আর [ আমরা জানি এক কিলোওয়াট সমান এক ইউনিট ] তারপরে আপনাকে ওই ইউনিটের সাথে বর্তমান বাজারের বিদ্যুৎ দাম গুণ করতে হবে। যেটা বের হবে সেটি হল আপনার একঘন্টার এসির বিদ্যুৎ বিল।

E= p×t

= 1100w × 1h

= 1100%1000

= 1.1kwh [1wh=1unit]

= 1.1 ×6.50 tk

= 7.15 tk

অতএব ,যদি 6.50 টাকা বিদ্যুতের ইউনিট হয় আর একটি এক টনের 1100 ওয়ার্ডের এসি হয় তাহলে প্রথম এক ঘন্টা চললে 7.15 টাকা বিদ্যুৎ বিল আসবে।

এসির তাপমাত্রা কত রাখা উচিত

কোন নির্দিষ্ট সময়ে যদি এসি বন্ধ করে আবার চালু করতে হয়। এটি অনেক কষ্টদায়ক। কারণ বারবার এসি বন্ধ করা আর চালু করা এটি মোটেও সুবিধার নয়। এর জন্য আমাদের জানতে হবে , কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় এসি চালালে আমরা শান্তিতে এসি রুমে থাকতে পারবো ?
 
বাইরের আবহাওয়া যদি 38 ডিগ্রি সেমি হয়ে থাকে। তাহলে আমাদের এসির তাপমাত্রা 23থেকে 24 ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখতে হবে। যাতে করে আপনাকে বারবার এসি বন্ধ কিংবা চালু করা প্রয়োজন হবে না এবং আপনি আপনার সুবিধামতো এটি 23-24-25-26-27-28 এইভাবে বাড়াতে পারেন।

এসির তাপমাত্রা কত হলে স্বাস্থ্য ভালো হয়?

বাইরে তাপমাত্রা যখন অনেক বেশি হবে। তখন যদি আপনি এসি রুমের মধ্যে থেকে বাইরে বের হবেন। তখন অনেক বেশি তাপমাত্রা হবার কারণে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এর জন্য এসির তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ।এমনভাবে এসির তাপমাত্রা রাখতে হবে যেটি বাইরে তাপমাত্রা থেকে কিছু অংশে কম।

যেমন: বাইরে তাপমাত্রা যদি 38 ডিগ্রি হয়, তা হলে আপনি আপনার এসির তাপমাত্রা 23 থেকে ২৮ এর মধ্যে রাখতে পারেন।এতে করে আপনার বাইরে তাপমাত্রার সাথে আপনার শরীর কমফোর্টেবল হয়ে নিজেকে ঠিক করে নেবে।
 
আর আপনি যদি একদম কম টেম্পারেচারে এসি রুমের বথাকেন। তাহলে বাইরে বের হওয়ার পরে যদি বাইরে অনেক গরম থাকে তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এটি ক্ষতিকারক।

এসির বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ?  

একজন ব্যক্তি যখন সব সময় এসি রুমের মধ্যে থাকে। তখন তার কারণে তার শরীরের আদ্রতা কমে যায় ।যে কারণে ত্বকের অনেক ক্ষতি হয় । আমাদের শরীরে অনেক ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞরা বলেন যে , সব সময় এসি রুমের মধ্যে থাকার কারণে মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়ে যায় অনেকেই।
 
এসি রুমের মধ্যে নয় থেকে দশ ঘন্টা যদি থাকা যায় তাহলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন: কারো শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে, আবার অনেক সময় এসি রুমে থাকার কারণে অনেকের এলার্জি বৃদ্ধি হতে পারে‌ , আপনি যদি শরীর ঘামা অবস্থায় এসি রুমের মধ্যে ডুকেন।
 
তাহলে আপনি ঘেমে থাকার কারণে যখন আপনার শরীর অনেক দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যাবে। তখন আপনার হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমাদের পরামর্শ

প্রিয় পাঠক যখন আমরা অতিরিক্ত সময় এসির রুমের মধ্যে থাকি। তখন অনেক পরিমাণে আমাদের বিদ্যুৎ বিল আসে। এর জন্যই সব সময় এসি রুমে থাকার অভ্যাস না করাই ভালো। এতে আমাদের অর্থও বাজবে , শরীর অসুস্থ থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url